রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন
সুদেব কান্তি দে বিশেষ প্রতিনিধি:
লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের উত্তর জলদাশ পাড়া এলাকায় অগ্নিকান্ডে ১১ জেলে পরিবারের বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় ক্ষতিগ্রস্থরা।
১৮ই জানুয়ারী সোমবার সন্ধ্যার দিকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটে বলে স্থানীয়রা জানায়।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থরা হলেন যথাক্রমে সোনারাম জলদাশ, চিত্ররঞ্জন জলদাশ,সুমন জলদাশ, সবিতা জলদাশ, সুবল জলদাশ, পরিমল জলদাশ, মৃদুল জলদাশ, সুধীর জলদাশ, নন্দ জলদাশ, রবি জলদাশ ও নুপুর জল দাশ।
স্থানীয় কয়েক জন বলেন, সবিতা জলদাশের বাড়ি থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়ে মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ১১পরিবারের বসতঘর পুড়ে ছাই করে দেয়। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে প্রায় ১ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ফায়ার সার্ভিসের টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে না আসলে প্রায় শতাধিক পরিবারের বসতঘর পুড়ে যেত বলেও জানায় স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে লোহাগাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক( তদন্ত) মোঃ রাশেদুল ইসলাম,লোহাগাড়া থানার এসআই দুলাল বাড়ৈ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: কাউছার উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ক্ষতিগ্রস্থ মৃদুল জলদাস বলেন, আমার স্ত্রী ৩ বছর ধরে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করতেছে। ডাক্তার তাকে ভারতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে বলে। তার চিকিৎসার জন্য ঘটনারদিন সোমবার গ্রামপুলিশ লক্ষণ জলদাশকে সাক্ষী করে গ্রামীণ ব্যাংক থেকেসকাল ১০ টায় ৫ লক্ষ টাকা কিস্তি নিয়ে বাড়িতে রেখেছিলাম। আগুনে আমার সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। এখন আমার স্ত্রীকে বাচাঁনোর আর কোন পদ রইলনা।
পরিমল জলদাস বলেন, আগুনে বাড়িতে থাকা নগদ ৬০ হাজার টাকা,২ ভরি স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে গেছে।
সুবলের স্ত্রী কমলী বলেন,বাড়ি করার জন্য একটি জায়গা ক্রয় করতে
গত বৃহস্পতিবার গ্রামীণ ব্যাংক থেকে দেড়লক্ষ টাকা কিস্তি নিয়েছি এবং ৫০ হাজার টাকা ধার করে বাড়িতে রেখেছিলাম। আগুনে সবপুড়ে ছাই করে ফেলেছে।
পরিমলের মেয়ে দুলালী জলদাশ বলেন, বসতবাড়ির জন্য একটি জায়গা ক্রয় করতে কয়েকটা এনজিও থেকে ৪ লক্ষ টাকা কিস্তি নিয়েছিলাম। এখন সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছি।
সুধীরের স্ত্রী ববিতা বলেন বাড়ি সংস্কার করার জন্য একটি এনজিও থেকে ১ লক্ষ টাকা কিস্তি নিয়েছিলাম। আর এখন বাড়িটাই পুড়ে গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ কাউছার জানান, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সবাই জেলের কাজ করে সংসার চালায়। তারা আসলে খুব বেশী অসহায়, অগ্নিকান্ডে তাদের সর্বস্ব শেষ হয়ে গেছে।ক্ষতিগ্রস্থদের ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র (কম্বল) এবং খাদ্যসামগ্রী দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো: জুলহাস বলেন,খবর পাওয়ার ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। প্রায় ১ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।
তিনি আরো বলেন বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।